ধামরাই সংবাদলিড নিউজ

ধামরাইয়ের গাজীখালি নদীতে সেতু হবে কবে ২০ গ্রামবাসীর দুর্ভোগ চরমে

নবীন চৌধুরী,
ঢাকার ধামরাই উপজেলার প্রত্যাশা-বাছট গাজীখালি নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে দুটি উপজেলার ২০ গ্রামের মানুষ। ধামরাই উপজেলার বালিয়া, গাংগুটিয়া ও পার্শ¦বর্তী সাটুরিয়া উপজেলার সাটুরিয়া ইউনিয়নের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের ভরসা এখন বাঁশের সাঁকো ও খেয়া নৌকা। সারা বছরই স্থানীয় তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীকে ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাকো ও বর্ষায় খেয়া নৌকায় পার হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও উপজেলা সদরসহ কাওয়ালিপাড়া বাজারে যেতে হচ্ছে। গাজীখালি নদীতে একটি সেতু নির্মাণের জন্য স্থানীয় এলাকাবাসী দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে দাবি জানিয়ে এলেও তা কার্যকর হচ্ছে না। ফলে অবহেলিত ধামরাই ও সাটুরিয়া উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের দুর্ভোগের পাশাপাশি তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন কৃষি পণ্য ঢাকাসহ বিভিন্ন বাজারে নিয়ে কেনাবেচা করতে পারছে না। বিভিন্ন সময় নির্বাচন এলে জনপ্রতিনিধিরা সেতু নির্মাণের আশ^াস দিলেও কেউ বাস্তবায়ন করেনি। ভোগান্তি লাঘবে দ্রæত একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
বাছট বৈতলা মোকদমপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হাবিবুল্লাহ মিজান বলেন, ধামরাই উপজেলার পশ্চিমাঞ্চল বালিয়া, গাংগুটিয়া ও সাটুরিয়া উপজেলা সীমান্ত ঘেঁষা গাজীখালি নদী দ্বারা বিভক্ত। এ নদীর ওপর স্বাধীনতার দীর্ঘ ৫০ বছরেও কোন সেতু গড়ে ওঠেনি। নদীর পশ্চিমপাড়ে রয়েছে বাছট বৈতলা মোকদমপাড়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা, বাছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পূর্ব পাড়ে রয়েছে প্রত্যাশা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়। তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েকশ শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ নিয়ে এ বাঁশের সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হতে হয়। অনেক সময় সাঁকো থেকে পড়ে শিক্ষার্থীরা আহত হন।
ধামরাইয়ের প্রত্যাশা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভীন আক্তার জানান, দুটি উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের মধ্যে বাছট, বৈলতলা, মোকদমপাড়া, সেখরীনগর, প্রত্যাশা, ভাবনহাটি, রামরাবন, কাওয়ালিপাড়া, গাংগুটিয়ার অর্জুনালাইসহ প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষকে চরম কষ্টের মধ্য দিয়ে নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ও খেয়া নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে সারা বছর চলাচল করতে হচ্ছে। এতে তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীকে উপজেলা সদর ও কাওয়ালিপাড়া বাজারে যাওয়ার জন্য প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে যেতে হয়। ওইসব এলাকার কৃষকদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য স্থানীয় কাঁচা বাজারে পানির দামে বিক্রি করতে বাধ্য হন। শুধু গাজীখালি নদীর ওপর একটি সেতুর অভাবে তাদের এ দুর্ভোগের শেষ নেই। গাজীখালি নদীতে একটি সেতু নির্মিত হলেই কয়েকটি ইউনিয়নের শিক্ষার্থী, কৃষকসহ লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হবে।
বালিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান বলেন, প্রত্যাশা-বাছট নদীর ওপর একটি সেতু নির্মাণ হলে দুই উপজেলাবাসীর দুর্ভোগই লাঘব হবে। ওইখানে একটি সেতু নির্মাণের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে তাগাদা দেওয়া হবে।
ধামরাই উপজেলা প্রকৌশলী মো. আজিজুল হক বলেন, গাজীখালি নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য প্রস্তাব করা হবে।

ছবির ক্যাপশন: ধামরাইয়ের প্রত্যাশা-বাছট গাজীখালি নদীর ওপর ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *